

সাকিব আহসান
প্রতিনিধি,পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার ৭ নং হাজীপুর ইউনিয়নে আবাদি জমির মাটি কাটাকে কেন্দ্র করে নতুন করে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পয়গাম, ইব্রাহিম ও জাহাঙ্গীর নামের কয়েকজন তাদের আবাদি জমির মাটি ব্যাপক হারে কেটে বিক্রি করছেন কোনো প্রকার সরকারি অনুমতি ছাড়াই। একই সঙ্গে জাহাঙ্গীর ওই মাটি নিজের মালিকানাধীন আরেকটি জমিতে নিয়ে গিয়ে সেখানে চাতাল নির্মাণের প্রস্তুতিও নিচ্ছেন।
প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কৃষিজমির মাটি কাটার এই কর্মকাণ্ড শুধু পরিবেশ ও কৃষি উৎপাদনের জন্য হুমকি নয়, বরং সরাসরি আইন লঙ্ঘনের শামিল। বিষয়টি জানতে চাইলে পয়গাম ও জাহাঙ্গীর প্রতিবেদককে সরাসরি বলেন, “আমার জমি, আমার মাটি, আমরা যা ইচ্ছে করতে পারি।” তাদের এই মন্তব্য স্থানীয়দের মাঝে আরও ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে, কারণ আবাদি জমি ব্যক্তিগত হলেও এর ব্যবহারে আইনি সীমা অত্যন্ত স্পষ্ট।
বাংলাদেশের পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (Environment Conservation Act) অনুযায়ী, পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন যেকোনো কার্যক্রমের জন্য প্রশাসনের পূর্বানুমতি বাধ্যতামূলক। আবাদি জমির টপসয়েল কাটাকে পরিবেশ ও কৃষি উৎপাদনের জন্য ক্ষতিকর হিসেবে গণ্য করা হয় এবং আইন এটি নিষিদ্ধ করে।
কৃষিজমি রক্ষা আইন, ২০১৬ অনুযায়ী
আবাদি জমিকে নষ্ট করা,মাটি কেটে জমির স্বাভাবিক উচ্চতা পরিবর্তন করা,
অথবা কৃষি-উপযোগিতা নষ্ট করে অন্য কাজে ব্যবহার করা,
এসবই শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আইনটির ৪(১) ধারায় বলা হয়েছে: কোনো ব্যক্তি অনুমতি ছাড়া কৃষিজমির ধরন পরিবর্তন করতে পারবেন না।
এ ছাড়া বাংলাদেশ খনিজ সম্পদ উন্নয়ন বিধিমালা অনুযায়ী বৃহৎ পরিমাণ মাটি কাটলে প্রশাসনিক অনুমতি বাধ্যতামূলক, এবং অনুমতি ছাড়া কাটলে তা দণ্ডনীয়।
ফলশ্রুতিতে, আবাদি জমিতে টপসয়েল নষ্ট হলে ভবিষ্যৎ কৃষি উৎপাদন মারাত্মকভাবে কমে যাবে,জমির স্বাভাবিক গঠন পরিবর্তিত হলে জলাবদ্ধতা, ধস এবং প্রতিবেশগত ভারসাম্যহীনতা দেখা দিতে পারে।
অনুমতি ছাড়া মাটি বিক্রি হলে সরকারি রাজস্ব ক্ষতি হয় এবং নিয়মতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ভেঙে যায়।
চাতাল বা অন্য স্থাপনা কৃষিজমিতে উঠলে গ্রামীণ ভূমি ব্যবস্থাপনা আরও সংকটে পড়ে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, বিষয়টি নজরে আনার পরও এখনো পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আইন অনুযায়ী, উপজেলা প্রশাসন, ভূমি কর্মকর্তা ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সমন্বিতভাবে তাৎক্ষণিক তদন্ত করা উচিত। কারণ এই ধরনের কর্মকাণ্ড চলতে থাকলে আবাদি জমির অপচয় এবং পরিবেশগত ক্ষতি বড় ধরনের সংকটে রূপ নিতে পারে।
৮০ রুপায়ন টাওয়ার, লেভেল -৩ (লিফটের 3), কাকরাইল, ঢাকা 1000, সম্পাদক ও প্রকাশক: মোঃ শরিফুল আলম, সহ প্রকাশক: মোঃ ফারুক হোসেন । মোবাইল: 01604 872 968
Millennium NEWS BD