সাভার প্রতিনিধি:
ঢাকার সাভারে গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে ভয়াবহ ও পরিকল্পিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে একজন সাংবাদিককে অপহরণ, নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক আলী রেজা রাজু (২৭) যায়যায়দিন ও সবুজ বাংলাদেশে কর্মরত ছিলেন, তিনি নিজেই সাভার মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন,অভিযোগ করেছেন, হামলাটি সাধারণ অপরাধ নয়, বরং রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় পরিকল্পিত একটি ন্যাক্কারজনক হামলা।
মামলার এজাহার অনুসারে, হামলাকারীরা হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ফেরার পথে সাংবাদিককে দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অপহরণ করে। এরপর তাঁকে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে নিয়ে গিয়ে অমানবিকভাবে নির্যাতন চালানো হয়। হামলাকারীরা সাংবাদিকের মোবাইল ফোন, নগদ অর্থ ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিনিয়ে নেন।
সবচেয়ে নিকৃষ্ট ঘটনা হলো, তাঁকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন ফেসবুক আইডি থেকে তা প্রকাশ করা হয়, যাতে তাকে মাদক ব্যবসায়ী ও ছিনতাইকারী হিসেবে প্রচার করা যায়।
অভিযোগে নাম এসেছে কয়েকজন পরিচিত মাদক ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের অনুসারী সন্ত্রাসীর,
অভিযুক্তরা,ফিরোজ হোসেন ওরফে গুটি ফিরোজ সাদ্দাম হোসেন (কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ কর্মী) মানিক ওরফে খামচি মানিক,রুবেল ওরফে হলদি রুবেল,সাগর হোসেন ওরফে ফিটিং সাগর,দেলোয়ার হোসেন,জাকির আহম্মেদ ওরফে ফেন্সি জাকির,এবং ৩-৪ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে সাভারের কিছু এলাকায় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের আশ্রয়ে সন্ত্রাস ও মাদক কারবার বেড়ে চলছে।এই হামলার ফলে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
সাভার মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি জুয়েল মিঞা জানিয়েছেন, দণ্ডবিধির একাধিক ধারা ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনি বলেন, অভিযোগটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে এবং আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান।
সাংবাদিকরা এই হামলাকে প্রেস স্বাধীনতার ওপর নির্যাতন ও ভয় দেখানোর চক্রান্ত হিসেবে দেখছেন। আলী রেজা রাজু বলেন,“এই হামলার উদ্দেশ্য আমার সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করা এবং পেশাগত দায়িত্ব পালনে আমাকে ভীতিশূন্য করা।”
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে সাভারসহ ঢাকার আশেপাশের এলাকাগুলোতে সাধারণ মানুষ দৈনন্দিন জীবনে নিরাপত্তাহীনতা অনুভব করছে। স্থানীয়দের মতে, দ্রুত ও কার্যকর আইন প্রয়োগ না হলে এই ধরনের পরিকল্পিত সন্ত্রাসের ঘটনা পুনরায় ঘটতে পারে।