মো: এলাহী মালয়েশিয়া
শ্রমিকদের সার্বক্ষণিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে মালয়েশিয়া নতুন এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। ১৯৬৯ সালের এমপ্লয়িজ সোশ্যাল সিকিউরিটি আইন (অ্যাক্ট ৪) সংশোধনের প্রস্তাব আসন্ন সংসদ অধিবেশনে উপস্থাপন করা হবে। এই পদক্ষেপ মালয়েশিয়ার মাদানি নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যেখানে প্রতিটি কর্মীকে জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা নেটওয়ার্কে আনার প্রতিশ্রুতি রয়েছে।
শনিবার (৪ অক্টোবর) মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী স্টিভেন সিম চি কিয়ং জানান, আধুনিক কর্মসংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই সংশোধনী কার্যকর হলে কর্মীরা শুধু অফিস সময়েই নয়, অফিসের বাইরেও সামাজিক সুরক্ষা সংস্থার (পারকেসো) আওতায় থাকবেন। এই সংশোধনী আজকের পরিবর্তিত কর্মপরিবেশকে প্রতিফলিত করবে এবং কর্মীদের সর্বাত্মক সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।
২০১৫ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আসা কর্মীর সংখ্যা ৬৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৫ সালে কর্মীদের সর্বোচ্চ সুবিধার পরিমাণ যেখানে ছিল ২,৬৫৫ রিঙ্গিত, ২০২৫ সালে তা দাঁড়িয়েছে ৫,৩৫৫ রিঙ্গিতে। ‘লিন্দুং কাসিহ’ স্কিম ও আই-সুরি কর্মসূচির আওতায় ইতিমধ্যে পাঁচ লাখেরও বেশি গৃহিণী উপকৃত হয়েছেন। সম্প্রতি পাশ হওয়া গিগ কর্মী আইন গিগ অর্থনীতির কর্মীদের সুরক্ষায় যুগান্তকারী উদ্যোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
মালয়েশিয়ার নেতৃত্বকে আন্তর্জাতিক মহলেও স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে। কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত বিশ্ব সামাজিক সুরক্ষা ফোরামের সভা সফলভাবে আয়োজনের পর পারকেসো-এর প্রধান নির্বাহী দাতুক সেরি ড. মোহাম্মদ আজমান আজিজ মোহাম্মদ ২০২৬-২০২৮ মেয়াদের জন্য পুনরায় সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন।
মানবসম্পদমন্ত্রী স্টিভেন সিম চি কিয়ংয়ের মতে, এটি মালয়েশিয়ার সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থার প্রতিফলন। বিশ্বে এখন নমনীয় চাকরি, রিমোট ওয়ার্ক, গিগ অর্থনীতি দ্রুত বিস্তার লাভ করছে। অনেক উন্নত দেশেও এখনো অফিস সময়ের বাইরে কর্মীসুরক্ষা নিশ্চিত করার বিষয়ে চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। এই প্রেক্ষাপটে মালয়েশিয়ার ২৪ ঘণ্টার সুরক্ষা আইন একটি অগ্রসর পদক্ষেপ, যা কর্মীদের প্রতি সরকারের দায়িত্বশীলতা এবং ভবিষ্যৎ কর্মসংস্কৃতির জন্য প্রস্তুতির প্রতিফলন।