নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের দীর্ঘসূত্রিতা, অসঙ্গতি ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন এনটিআরসি’র ১ম থেকে ১২তম নিবন্ধনধারী বঞ্চিত শিক্ষকেরা। শনিবার ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে অনুষ্ঠিত এক জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষক নেতারা জানানন২০১৩ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত তিন সরকার পরিবর্তন হলেও ন্যায্য নিয়োগ বঞ্চনার অবসান হয়নি, বরং সমস্যা আরও জটিল হয়েছে। ফোরামের নেতারা বলেন, এনটিআরসি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ঘন ঘন পরিবর্তন, অস্বচ্ছতা ও আদালতের জটিলতায় হাজার হাজার যোগ্য শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে কর্মহীন জীবন কাটাচ্ছেন। ১৮-৩৫ বছরের চাকরির উপযুক্ত বয়স অতিক্রম করে অনেকেই হতাশায় ভুগছেন। অথচ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শূন্যপদ থাকা সত্ত্বেও যথাসময়ে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না। প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয় সাম্প্রতিক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ১০ থেকে ১২তম নিবন্ধনধারী শিক্ষকরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। শর্ত পরিবর্তন, জেলা উপজেলা ভিত্তিক কোটা জটিলতা এবং অসম ফেজভিত্তিক সুপারিশের কারণে অনেক যোগ্য প্রার্থী চূড়ান্ত নিয়োগ থেকে বাদ পড়েছেন। ফোরাম নেতাদের দাবি, দীর্ঘ অপেক্ষার পরও আমরা শুধু আশ্বাস পেয়েছি, সমাধান পাইনি। শিক্ষকরা আজ মানবেতর জীবনযাপন করছেন।তারা আরো বলেন২০২২ সালে দেওয়া নিয়োগ নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করায় বহু শিক্ষক বয়স হারিয়েছেন। প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক সব স্তরে শূন্যপদ থাকলেও নিয়োগ প্রক্রিয়া অকারণে আটকে রাখা হয়েছে। ফোরাম নেতারা অভিযোগ করেন, ২০টি ধাপে সুপারিশ হওয়ার কথা থাকলেও তা কখনোই পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন হয়নি। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়: বঞ্চিত শিক্ষকরা যে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করেছেন। এনটিআরসির ‘উদ্যোগ’ থাকলেও বাস্তবায়ন দুর্বল, সুপারিশ প্রক্রিয়া অস্বচ্ছ। বারবার নীতিমালা পরিবর্তনের কারণে পুরোনো নিবন্ধনধারীরা বঞ্চিত। বয়সোত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও বিকল্প সমাধান বা বিশেষ কোটা দেওয়া হচ্ছে না। ১–১২তম নিবন্ধনধারী বঞ্চিত প্রার্থীদের মামলা চলছে, তবে দ্রুত নিষ্পত্তির কোন উদ্যোগ নেই। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শূন্যপদ থাকা সত্ত্বেও তা প্রকাশ করা হয় না। তাদের দাবি,দ্রুত সময়ের মধ্যে ১–১২তম নিবন্ধনধারীদের জন্য বিশেষ নিয়োগ সার্কুলার প্রকাশ করতে হবে।বয়সোত্তীর্ণ প্রার্থীদের জন্য এককালীন বয়স ছাড় দিতে হবে। এনটিআরসির নিয়োগ প্রক্রিয়া ডিজিটাল ও স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করতে হবে। আদালতে থাকা মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল প্রয়োজন। জেলা উপজেলা ভিত্তিক অসঙ্গতিপূর্ণ কোটা বাতিল বা পুনর্বিন্যাস করতে হবে। প্রেস ব্রিফিং শেষে কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা বলেন আমরা চাই না কেউ আন্দোলনে নামুক। আমরা চাই ন্যায়, স্বচ্ছতা এবং বঞ্চনার অবসান। তারা প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেন, যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষকরা নিয়োগ পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারেন।

















